1. admin@dailyoporadhonusondhanltd.net : admin :
  2. mdalamin0972@gmail.com : alamin :
শিরোনামঃ
ঢাকায় নিহত ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী সোহাগের দাফন বরগুনায় সম্পন্ন  বরগুনায় ৩৩০০ কৃষকের মাঝে ভেজা ও নষ্ট সার-বীজ বিতরণ, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার গাফলিত” কৃষকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ বটিয়াঘাটার ৪ নম্বর সুরখালি ইউনিয়নের জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কর্মী সম্মেলন ২০২৫ বাঁশখালী ডিগ্রি কলেজের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন এডভোকেট আশরাফ হোসেন রাজ্জাক। বালিয়াডাঙ্গীতে এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করায় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা ভিজিএফের চাল বিতরণে গিয়ে ইউপি সদস্যদের বাধার মুখে এসিল্যান্ড বাঁশখালীতে আস্করিয়া সড়ক নয় যেন মিনি পুকুর বাগেরহাটের ইউএনও মুস্তাফিজুর রহমান মানবতার সেবায় নিয়োজিত গোমস্তাপুরে ছেলে নিখোঁজ ১৩ দিন হলেও এখনো মিলেনি খোঁজ বাবা মায়ের আর্তনাদ ধাড়িয়া বন্দরে বিএনপি’র সদস্য নবায়ন কার্যক্রম সফল

শিক্ষায় নতুন আলো: ফুলঝুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুমির ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

  • আপডেট সময়ঃ শুক্রবার, ২৭ জুন, ২০২৫
  • ৩১৬ জন দেখেছেন

বরগুনা প্রতিনিধি:
একজন নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষকের আন্তরিক প্রচেষ্টা কিভাবে একটি বিদ্যালয়ের পরিবেশে আমূল পরিবর্তন আনতে পারে, তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বরগুনার সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের, ফুলঝুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফাহমিদা নুসরাত সুমি।
প্রাথমিক শিক্ষাকে শিশুদের কাছে আনন্দদায়ক ও অর্থবহ করে তুলতে তাঁর নেওয়া ব্যতিক্রমী উদ্যোগগুলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেমন আগ্রহ তৈরি করেছে, তেমনি বিদ্যালয়ে এনেছে শৃঙ্খলা ও সময়ানুবর্তিতার নতুন ধারা।
সুমি প্রতিদিন সকালে সঠিক সময়ে স্কুলে আসা শিক্ষার্থীদের ছোট উপহার, প্রশংসাসূচক বাক্য কিংবা ‘সেরা সময়ানুবর্তী’ হিসেবে নাম ঘোষণা করে উৎসাহ দেন। তাঁর এই ক্ষুদ্র কিন্তু মননশীল পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের মনে উৎসাহ ও আনন্দ জাগিয়ে তোলে।
ফলে, আগে যেখানে কিছু শিক্ষার্থী নিয়মিত অনুপস্থিত থাকত বা দেরি করে স্কুলে আসত, এখন তারা আগ্রহ নিয়ে সময়মতো হাজির হয়।
এক অভিভাবক বলেন, “আগে আমার ছেলে স্কুলে যেতে চাইত না। এখন সকাল হলেই বই-খাতা গুছিয়ে নিজেই স্কুলে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়। এটা সুমী ম্যাডামের অবদান।
শুধু সময়ানুবর্তিতা নয়—সুমি আক্তার পাঠদানের ক্ষেত্রেও এনেছেন নতুনত্ব। গল্প, গান ও চিত্রের সাহায্যে তিনি কঠিন পাঠ্যবিষয় সহজভাবে উপস্থাপন করেন। শিক্ষার্থীদের মনোযোগ ধরে রাখতে এবং শেখার আগ্রহ বাড়াতে তাঁর এই পদ্ধতি কার্যকরভাবে কাজ করছে।
শিক্ষার্থীরা এখন কেবল পাঠ্যবই মুখস্থ করে না, বরং আনন্দের সঙ্গে বিষয়বস্তুর গভীরে প্রবেশ করতে শেখে। প্রতিদিনের পাঠ যেন তাদের কাছে একটি নতুন অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে।
সুমি শুধু একজন শিক্ষক নন—তিনি এই বিদ্যালয়ের একটি প্রাণশক্তি। সরকারের দেওয়া উপবৃত্তি, মিড-ডে মিল কর্মসূচি কিংবা জাতীয় দিবস উদযাপন—সবক্ষেত্রে তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহণ ও দায়িত্বশীলতা দৃশ্যমান।
অভিভাবকদের সাথেও তিনি নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন, যার ফলে শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অভিভাবকের মধ্যে একটি সুদৃঢ় সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মাহাতাব হোসেন জানান সুমী ম্যাডামের আন্তরিকতা ও উদ্ভাবনী চিন্তা-ভাবনা আমাদের সবাইকে অনুপ্রাণিত করে।
নিজের এই প্রচেষ্টার পেছনের দর্শন ব্যাখ্যা করে ফাহমিদা নুসরাত সুমি বলেন,
“আমি মনে করি, প্রতিটি শিশুই একটি সম্ভাবনার বীজ। শুধু সঠিক পরিচর্যা পেলেই তারা সমাজে নিজের স্থান তৈরি করতে পারে। আমি চাই তারা স্কুলকে ভালোবাসুক, শেখার আনন্দ খুঁজে পাক।
তিনি আরও বলেন, শুধু বই মুখস্থ করানো নয়, শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানবিকতা, সময়জ্ঞান, ও শৃঙ্খলা তৈরি করাও একজন শিক্ষকের দায়িত্ব।
স্থানীয় শিক্ষা কর্মকর্তারাও সুমি আক্তারের কাজকে প্রশংসার চোখে দেখছেন। ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও সুশীল সমাজের ব্যক্তিরা বলেন, এই ধরনের উদ্যোগ আমাদের পুরো জেলার শিক্ষা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। তাঁর মতো শিক্ষকরা আমাদের শিক্ষাক্ষেত্রে আশার আলো।
সার্বিকভাবে, ফাহমিদা নুসরাত সুমির প্রচেষ্টা দেখিয়ে দিচ্ছে—একজন শিক্ষক চাইলে তাঁর উদ্যোগ, ভালোবাসা এবং সৃজনশীলতায় বদলে দিতে পারেন একটি বিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ। এমন শিক্ষকরা শুধুমাত্র পাঠদানেই সীমাবদ্ধ থাকেন না, তারা শিক্ষার্থীদের জীবনে হয়ে ওঠেন সত্যিকারের পথপ্রদর্শক।

 

শেয়ার করুন

আরো দেখুন......